অনেকে ভাবেন ফর্সা ত্বক যাদের, তাদের এই সমাজে গ্রহণযোগ্যতা সবথেকে বেশি। মজার বিষয় হল এি কথাটা কিন্তু একেবারে ভুল। কিন্তু সে কথাটা সবাই বোঝেন কোথায় বলুন! তাই তো গ্য়াঁটের কড়ি খরচ করে ফেস হোয়াইটনিং ক্রিম মেখে চলেন। তাতে ত্বক কতটা ফর্সা হয়ে ওঠে, তা তো জানা নেই। কিন্তু স্কিনের মারাত্মক ক্ষতি হয়ে থাকে। কারণই বাজার চলতি বেশিরভাগ ফেস হোয়াইটনিং ক্রিমেই উপস্থিত থাকে প্রচুর মাত্রায় কেমিকাল, যা ত্বকের উপকারে তো লাগেই না। উল্টে মারাত্মক ক্ষতি করে থাকে। তাই ভুলেও এইসব ক্রিম মুখে লাগাবেন না যেন! তাহলে কি কোনও ভাবেই ত্বককে ফর্সা করে তোলা সম্ভব নয়? কে বললো সম্ভব নয়। আলবাৎ সম্ভব! তবে তার জন্য এই প্রবন্ধে একবার চোখ রাখতে হবে। তাহলেই দেখবেন ত্বক ফর্সা হয়ে উঠতে সময় লাগবে না। শুধু তাই নয়, ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটার কারণে সার্বিকভাবে সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পাবে চোখে পরার মতো। নিশ্চয় ভাবছেন এই প্রবন্ধে এমন কি লেখা আছে, যা এত উপকারে লাগবে?
আসলে এই লেখায় এমন কিছু ঘরোয়া ফেসপ্যাক সম্পর্কে আলোচনা করা হল, যা নিয়মিত মুখে লাগালে ত্বক ফর্সা হয়ে উঠতে সময় লাগবে না। তাই তো কম সময়ে সুন্দরী হয়ে উঠতে এই প্রবন্ধটি পড়কেই হবে। প্রসঙ্গত, যে যে ফেসপ্যাকগুলি এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে, সেগুলি হল…
১.পেঁপে দিয়ে বানানো ফেসপ্যাক:
হাফ বাওয়েল পেঁপের সঙ্গে হাফ চামচ চন্দন গুঁড়ো, হাফ চামচ অ্যালো ভেরা জেল এবং পরিমাণ মতো গোলাপ জল নিয়ে ভাল করে মিশিয়ে ফেলুন সবকটি উপাদান। তারপর সেই মিশ্রনটি মুখে লাগিয়ে কম করে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। সময় হয়ে গেলে হালকা গরম জলে দিয়ে ধুয়ে ফেলুন মুখটা। এইভাবে নিয়মিত যদি ত্বকের পরিচর্যা করতে পারেন, তাহলে দেখবেন ত্বক তো ফর্সা হয়ে উঠবেই। সেই সঙ্গে স্কিন টোনের উন্নতি ঘটতেও সময় লাগবে না। আসলে পেঁপের অন্দরে থাকা পেপেইন নামক একটি উপকারি উপাদান ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
২. কলার দিয়ে বানানো ফেসপ্যাক:
কলা এবং মধু দিয়ে দিয়ে বানানো ফেসপ্যাক মুখে লাগাতে শুরু করলে ত্বকের অন্দরে অ্যান্টিঅন্টিডেন্টের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। ফলে ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানেরা বেরিয়ে যায়, যা ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি করে থাকে। আর এমনটা হওয়া মাত্র ত্বকের সৌন্দর্য বাড়তে শুরু করে। প্রসঙ্গত, ত্বক যাতে সময়ের আগে বুড়িয়ে না যায়, সেদিকেও খেয়াল রাখে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। তাই তো ৩০-এর পর থেকে নিয়মিত কলা দিয়ে বানানো ফেসপ্যাক মুখে লাগানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা। এক্ষেত্রে অর্ধেক কলাকে প্রথমে চটকে নিতে হবে। তারপর তার সঙ্গে হাফ চামচ মধু, ১ চামচ দই এবং কয়েক ফোঁটা গোলাপ জল মিশিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে। এরপর সেই পেস্টটা মুখে লাগিয়ে কম করে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। সময় হয়ে গেলে হালকা গরম জলে দিয়ে ধুয়ে ফলতে হবে মুখটা।
৩. ওটসমিল ফেসপ্যাক:
নিশ্চয় ভাবছেন তো খাওয়ার জিনিস মুখে লাগাতে বলা হচ্ছে কেন? আসলে বন্ধু বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে ওটসমিলের অন্দরে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং আরও বেশ কিছু উপকারি উপদান, যা একদিকে যেমন ত্বককে বিষমুক্ত করে, তেমনি অন্যদিকে ত্বকের হারিয়ে যাওয়া আদ্রতাকে ফিরিয়ে আনে। ফলে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেতে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, ত্বকের উপরে জমতে থাকা মৃত কোষেদের স্তর সরিয়ে স্কিনকে উজ্জ্বল এবং প্রাণবন্ত করে তুলতেও এই খাবারটির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। তাই যদি চান অল্প সময়েই ত্বক ফর্সা হয়ে উঠুক, তাহলে ২ চামচ ওটসমিলের সঙ্গে ১ চামচ চন্দন গুঁড়ো এবং পরিমাণ মতো গোলাপ জল মিশিয়ে একটি পেস্ট বানিয়ে নিন। তারপর সেটি মুখে লাগিয়ে ভাল করে মাসাজ করুন। তাহলেই দেখবেন কেল্লাফতে!
৪. টমাটো ফেসপ্যাক:
এই সবজিটির অন্দরে উপস্থিত বেশ কিছু উপকারি অ্যাসিড, ত্বককে ফর্সা করে তুলতে এবং স্কিনের উজ্জ্বলতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। কিন্তু এক্ষেত্রে শুধু টামাটোকে কাজে লাগালে চলবে না। পরিবর্তে কয়েকটি টমাটোর টুকরো নিয়ে তার সঙ্গে ১ চামচ চিনি মিশিয়ে বানিয়ে ফেলতে হবে একটি পেস্ট। তারপর সেটি ভাল করে মুখে লাগাতে হবে। এমনটা করলে ত্বকের অন্দরে পি এইচ লেভেল বাড়তে শুরু করবে, যার প্রভাবে ত্বক ফর্সা হয়ে উঠতে দেখবেন সময় লাগবে না। প্রসঙ্গত, এই ফেসপ্যাকটি সপ্তাহে দু দিনের বেশি মুখে লাগাবেন না যেন!
৫. গোলাপের পাঁপড়ি এবং দুধ:
ত্বককে দুধে আলতা রং দিতে গোলাপের পাঁপড়ির কোনও বিকল্প নেই বললেই চলে। আর তার সঙ্গে যদি দুধ মেশান তাহলে তো কথাই নেই! আসলে গোলাপ পাঁপড়ির অন্দরে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং দুধে থাকা একাধিক পুষ্টিকর উপাদান একসঙ্গে মিলে যখন ত্বকের অন্দরে প্রবেশ করে, তখন একদিকে যেমন ত্বকের গভীরে পুষ্টির ঘাটতি দূর হয়, তেমনি ত্বকের স্বাস্থ্যেরও উন্নতি ঘটতে শুরু করে। তাই তো সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায় চোখে পরার মতো। এক্ষেত্রে ২ চামচ চন্দনের গুঁড়ো, ২ চামচ দুধ এবং পরিমাণ মতো গোলাপের পাঁপড়ি নিয়ে ভাল করে মিশিয়ে একটি মিশ্রন বানিয়ে নিতে হবে। তারপর সেটি মুখে এবং গলায় লাগিয়ে ভাল করে মাসাজ করতে হবে। এইভাবে যদি সপ্তাহে ২-৩ বার ত্বকের পরিচর্যা করা যায়, তাহলে ত্বক সুন্দর হয়ে উঠে।